![]() |
ঈশপের গল্প – দুষ্ট সিংহ ও শিয়াল |
ঈশপের
গল্প – দুষ্ট সিংহ ও শিয়াল
একমুখো
পদচিহ্ন পশুরাজ সিংহ খুব বুড়ো হয়ে পড়েছিল। দুর্বল শরীরে শিকার করে খাবার জোটানো
দায় হয়ে পড়ল—তাই সে ঠিক করল এবার থেকে বুদ্ধির জোরে খাবার জোটাতে হবে। সে
অসুখের ভান করে গুহায় পড়ে থাকল। রোজই কেউ-না-কেউ রোগীর খোঁজখবর নিতে গুহায় ঢোকে
আর সিংহমশাই খপ করে তাকে ধরে খেয়ে ফেলে। এভাবে অনেক জন্তুজানোয়ার পশুরাজের
বুদ্ধির শিকার হল। চতুর শেয়াল কিন্তু ব্যাপারটা ঠিকই ধরতে পেরেছিল। সে ধীর পায়ে
গুহার অদূরে দাঁড়িয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে শুধাল : রাজামশাই আজ কেমন বোধ হচ্ছে?
ভাঙা-ভাঙা
গলায় ভেতর থেকে জবাব এল : মোটেই ভালো নয় হে, মোটেই ভালো নয়। তবু ভালো
যে তুমি খোঁজ নিতে এলে। একা-একা আমি একেবারে হাঁপিয়ে উঠেছি। তা ভায়া বাইরে
দাঁড়িয়ে কেন? ভেতরে এসে বস।
বিজ্ঞ
শেয়াল মুচকি হেসে বলল : আসতাম ঠিকই কিন্তু ভরসা পাচ্ছি কই? রাজামশাই—পায়ের
ছাপগুলো দেখছি সবই ভেতরমুখো। যারা ভেতরে গেছে তারা বুঝি কেউ আর ফিরে আসেনি?
শিক্ষা
: বিপদসংকেত লক্ষ্য করে বিপদ এড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ।
পিপড়ের
সাহায্য
পিঁপড়ে
সারাটা গ্রীষ্মকালে ক্ষেতে-খামারে ঘুরে ঘুরে খাবার সংগ্রহে ব্যস্তসমস্ত। একটি
পতঙ্গ অবাক হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করল : সবাই যখন ছুটি উপভোঁগ করছে তখন তুমি কেন ভাই
এত ব্যস্ত হয়ে ছুটোছুটি করছ?
পিঁপড়ে
কিছু বলল না। সে নিজের কাজ করে যেতে লাগল। গ্রীষ্ম শেষ, শীত
এল ঘনিয়ে। শীতে কাঁপতে কাঁপতে একটি পতঙ্গ বেরিয়েছে খাবারের সন্ধানে। ক্ষিধের
জ্বালায় প্রাণ তার যায় যায়। কোথাও কিছু না-পেয়ে সে এল পিঁপড়ের কাছে খাবার
চাইতে। পিঁপড়ে তখন বলল : আমার মতো তোমারও ছুটির সময় খাবার যোগাড় করে রাখা উচিত
ছিল। তোমাকে তাহলে এখন আর খাবার ভিক্ষা চাইতে আমার কাছে আসতে হত না।
শিক্ষা
: প্রাচুর্যের মধ্যে থাকলেও ভবিষ্যতের ভবিষ্যতের অবশ্যম্ভাবী বিপদের জন্যে সংস্থান
করে রাখতে হয়।
- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -
(২৯) (অভাবীদের দান করার সময়) নিজের হাত গলায় বেঁধে
রেখো না এবং তাকে একেবারে খোলাও ছেড়ে দিয়ো না, তাহলে তুমি নিন্দিত ও অক্ষম হয়ে যাব। (৩০) তোমার রব যার জন্য চান রিযিক প্রশস্ত
করে দেন আবার যার জন্য চান সংকীর্ণ করে দেন। তিনি নিজের বান্দাদের অবস্থা জানেন
এবং তাদেরকে দেখছেন। (সুরা বনী ঈসরাইল)
No comments:
Post a Comment