![]() |
হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা - হায়াৎ মামুদ - Pied Piper of Hamelin – Bengali Translation (Part 2 of 2) |
হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা - হায়াৎ মামুদ - Pied Piper of Hamelin – Bengali
Translation (Part 2 of 2)
১ম পর্বের পর থেকে
হাঁটতে হাঁটতে
হাঁটতে হাঁটতে একসময় শেষ হল পথ। সামনেই জল টলমল নদী। শান্ত স্বচ্ছ হেসার বয়ে
যাচ্ছে ঝিরঝির করে। ছোট ছোট ঢেউ সূর্যকিরণে ঝিকমিক করছে, হাততালি দিয়ে আনন্দে নাচছে যেন তারা। নদীর কাছে এসে গেল বাঁশিওয়ালা, একেবারে নদীর ধারে কিন্তু থামল না তবু। একপাএকপা করে এগিয়ে গেল, পা ডুবল তার নদীর পানিতে, থামল না তবু। বাঁশি
বাজানোও থামছে না তার, বাঁশি বাজাতে বাজাতে অতি ধীরে
এগুচ্ছে সে পানির মধ্যে; আর পিছনে তার সারা হামেলিনের
ইঁদুর। বাঁশিওয়ালার পিছপিছ তারাও নেমেছে পানিতে। তারা হাবুডুবু খেতে লাগল নদীর
পানিতে। আস্তে সব ডুবে গেল—সমস্ত ইঁদুর, হামেলিনের ইঁদুরবাহিনী। না, ভুল বললাম; সব ডোবেনি, কেবল বেঁচে রইল একটা ইঁদুর। ভীষণ মোটা
সে, গায়ে প্রচণ্ড শক্তি। সাঁতরাতে সঁতরাতে অতিকষ্টে অবশেষে অন্য পারে গিয়ে উঠতে
পেরেছিল সে। হামেলিন শহরের সমস্ত ইঁদুরবংশের ভিতরে আসলে সে-ই শুধু থেকে গেল, পৃথিবীর আর সব ইঁদুরকে এই ঘটনা বলবার জন্য একমাত্র সে-ই বেঁচে রইল। সে গল্প
করত : “বাঁশির তীক্ষ্ণ মধুর আওয়াজ কানে আসতেই
আমার মনে হল—পাকা টইটম্বুর অনেক আপেল কেউ আলমারির
মধ্যে রাখল, অন্যান্য বহু আলমারির দেরাজ খুলে গেল, সেখান থেকে উঁকি দিচ্ছে নানান রকমের সুখাদ্য, কী মিষ্টি তাদের গন্ধ! অনেক ফ্লাস্কের ছিপি খোলার শব্দ পেলাম, যেটাতে মাখন রাখা হয়, তার ঢাকনি খোলার আওয়াজও কানে এল।
আর এই সমস্ত কিছুই যেন চেঁচিয়ে ডাকতে লাগল আমাদের : “এসো আনন্দ করো তোমরা, আনন্দ করো। এখানে একসঙ্গে বহু
খাবার জড়ো করে রেখেছি তোমাদের জন্য, সকাল দুপুর
বিকেল রাত—চার বেলাই তোমরা হুটোপুটি করে খেতে
পারবে। এসো, চলে এসো এখানে। আমার মনে হল, ঐসব খাবার যেন মাত্র ইঞ্চিখানেক দূরে রয়েছে, আমার চোখের সামনে। তারপরে যে কী হল, মনে নেই; আমি অনুভব করলাম—হেসারের পানির স্রোতে
আমি হাবুডুবু খাচ্ছি।”
এদিকে ততক্ষণে
মেয়র সাহেব ও অন্যান্য লোকজন চেঁচামেচি শুরু করেছেন, “ওরে সব হাত লাগা, আয় সব। ইঁদুরের গর্তগুলো বন্ধ করে
দে, খুব ভালো করে বুজিয়ে দে!” আর ঠিক তখনি
মেয়র চোখ তুলে তাকাতেই দেখতে পেলেন, তাঁর সামনে
দাঁড়িয়ে রয়েছে অদ্ভুত পোশাক-পরা সেই বহুরূপী বাঁশিওয়ালা। মায়াবি জাদুকর বলল : “হুজুর, কিছু মনে করবেন না, দয়া করে আমার হাজার গিল্ডার মিটিয়ে দেন যদি এবার—।”
এক হাজার
গিল্ডার! মেয়র সাহেবের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল এ-কথা শুনে, তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদেরও তাই। ভীষণ দুশ্চিন্তার হাত থেকে রেহাই পেয়েছেন তারা, সাংঘাতিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এবার একটা বিরাট খানাপিনার বন্দোবস্ত
হবে, দারুণ দামি-দামি খাবার খাবেন সবাই। কিন্তু এই হতভাগাটাকে যদি এক হাজার গিল্ডার
দিয়ে দিতে হয়, তাহলে চলবে কেমন করে? ইশ,
এইরকম এক জবড়জং ভূত, চাল নেই চুলো
নেই, সে কিনা নিয়ে যাবে একটি হাজার গিল্ডার।
“এ আবার এক নতুন ফ্যাসাদ, দেখছি।” মনে মনে বিরক্ত হয়ে ওঠেন মেয়র। কিন্তু লোকটাকে তাড়াবারই বা উপায় কী? উপায় অবশ্য একটা বের হল। মেয়র সাহেব মহাগম্ভীর হয়ে বলতে শুরু করলেন ; “দ্যাখো হে, হেসার নদীতেই তো ব্যাপারটা চুকেবুকে
গেছে। আমরা তো স্বচক্ষেই দেখলাম, ইঁদুরগুলো নদীতেই ডুবে
মরল, তারা তো আর ফের বেঁচে উঠবে না। তা খুব খুশি হয়েছি আমরা, বুঝলে—সত্যিই খুব খুশি হয়েছি। চা-টা খাবার
জন্য আমরা অবশ্যই তোমাকে সামান্য কিছু দেব বৈকি। এতবড় উপকার করলে—খুশি হয়েই দেব বৈকি, আমাদের সাধ্যমতো দেব। তবে ঐ-যে
গিল্ডারের কথা বললে না, আচ্ছা বাপু-ওটা কি একটা কথা হল? আমরা তো কেবল এক করেছিলাম; তাছাড়া অত টাকাই বা
আমাদের কোথায় বলো? এ তো দু-দশটা গিল্ডার নয়, একটি হাজার—তার সামর্থ্য কি বাপু আছে আমাদের?” এরপর যেন পুরনো শোকে কেঁদে ফেললেন মেয়র : “ইঁদুর হারামজাদারা সব্বোনাশ করে গেছে, একেবারে
ডুবিয়ে গেছে, খাবার-দাবার কাপড়-জামা ছারখার করে
একেবারে ভিখিরি করে দিয়েছে আমাদের। তুমি বুঝলে হে, কিছু মনে কোরো না, পঞ্চাশ গিল্ডার নিয়ে যাও। একটু
মিষ্টিমুখ কোরো কেমন?”
সে, বহুরূপী বাঁশিওয়ালা, খুব মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনল
মেয়রের। প্রথমে যেন কিছুই বুঝতে পারছে না সে এরকম অবাক হল। তারপর ভয়ানক রেগে গেল, একেবারে ক্ষিপ্তপ্রায় হয়ে চেঁচিয়ে উঠল : “তার মানে? না, না, কোনোরকম ধাপ্পাবাজির চেষ্টা করবেন না। খামোকা সময় নষ্ট করার মতো সময় আমার
একেবারেই নেই। আমার হাতে বেজায় কাজ। বিশেষ করে আজ রাত্রেই আমাকে বাগদাদ পৌছুতে
হবে। বাগদাদের খলিফার বাবুর্চিখানায় একজাতীয় ভয়ানক কাঁকড়াবিছে বাসা বেঁধেছে, সেগুলো তাড়িয়ে আসতে হবে। এজন্য আজ রাতের খাবার খলিফার বাবুর্চি বিশেষভাবে
রান্না করবে আমার সম্মানে। এ-ব্যাপারে তাদের সাথে আমি কোনো দরাদরি করিনি, আপনাদের সঙ্গেও কোনোরকম দরাদরি করব না। তবে জেনে রাখুন, আমার ভেঁপু অন্য সুরেও বাজতে পারে।”
শেষের এই কথায়
আরো খাপ্পা হয়ে গেলেন মেয়র। চেঁচিয়ে উঠলেন রাগে : “কী বলছ হে তুমি? আমাকে কি অপমান করতে চাও, এ্যা?
তুমি বাবুর্চির সঙ্গে যে আমার তুলনা দিলে, বলি সাহস তো তোমার কম নয় হে, এ্যা? যাও,
যাও, যা-ইচ্ছে করোগে, দেখি কী করতে পারো তুমি। যত জোরে ইচ্ছে বাজাও না তোমার ভেঁপু, বাজাতে বাজাতে ফাটিয়ে ফ্যালো, বুঝলে হে, ফাটিয়ে ফ্যালো। যাও, এখন ভাগো এখান থেকে।
আবার নামল সে
পথে, অদ্ভুত খামখেয়ালি ভেঁপুবাজিয়ে। আবার সে ফু দিল তার বাঁশিতে। কী আশ্চর্য স্বর, কী মায়াবি মধুর তার ভেঁপু। গতবারে বেজেছিল যেমন, তারচেয়ে সহস্রগুণ মধুরতর হয়ে বাজল। আর সঙ্গে সঙ্গে হৈচৈ শুরু হয়ে গেল যেন
কোথায়,
হুটোপুটি-হুল্লোড়ের শব্দ, যেন একরাশ দামাল ছেলে ছুটোছুটি করছে, কথা বলছে কলকল
করে। আরে,
আসলেই তো তাই! সারা হামেলিন শহরের ছেলেমেয়েরা যে-যার বাড়ি
থেকে বেরিয়ে ছুটে আসছে রাস্তায়। তাদের কচি-কচি ছোট্ট হাতপা, রেশমের মতো সোনালি চুল তাদের ফুরফুর করে বাতাসে উড়ছে, আনন্দের জ্যোতি চকচক করছে তাদের চোখে। খুশিতে টইটম্বুর হয়ে দৌড়ে আসছে তারা।
থুপথুপ করে হেঁটে-হেঁটে নেচে-নেচে দুলে-দুলে, দুহাতে তালি
দিতে-দিতে সমস্ত ছেলেমেয়ে বাঁশিওয়ালার পিছনে ছুটে আসছে। ব্যাপার দেখে-শুনে
মেয়রের মুখ হা হয়ে গেছে, সভাসদদের বুকে হাতুড়ি পিটাচ্ছে
যেন। কারো চক্ষে পলক পড়ছে না, সবাই স্তম্ভিত হয়ে
দাড়িয়ে আছে, দৌড়ে গিয়ে জাদুকরকে-যে বাধা দেবে
সে-ক্ষমতাও লোপ পেয়েছে সকলের। অবাক বিস্ময়ে তারা কেবল দেখছে, দেখছে, দেখছে.. ভেপুবাজিয়ে কোথায় নিয়ে
যাচ্ছে এই দুধের শিশুদের? তবে কি হেসারের পানিতে ওদেরও—? লোকটা যে ক্রমে হেসারের দিকেই এগুচ্ছে! কী করা যায় তাহলে? হামেলিন শহরের সমস্ত মানুষ স্তব্ধ নিশ্বাসে তাকিয়ে রইল নিয়তির দিকে। না-হ্
যাক, বাচা গেল তাহলে। বাঁশিওয়ালা হেসারের কাছে গিয়েই অন্য রাস্তায় মোড় নিয়েছে।
নদীর পাশ দিয়ে বেরিয়ে পাহাড়ের দিকে চলে গেছে রাস্তাটা। কোপেলবের্গ পাহাড়
সামনেই। বাঁশি বাজছে তখনো, ভেঁপু বেজে চলেছে দুরন্ত তালে, শিশুরাও নেচে চলেছে সঙ্গে সঙ্গে, বুকে তাদের
আনন্দের ফোয়ারা।। মেয়র, সভাসদ, নগরবাসী—সবাই ততক্ষণে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে
বাঁচল। বলাবলি করছে সবাই নিজেদের মধ্যে : “হুঁ ,
এতবড় পাহাড় পার হয়ে আর যেতে হবে না! দ্যাখো না, এক্ষুনি থামল বলে আর কী, পাহাড়ের দিকে।
শেষকালে একেবারে মুখোমুখি যখন এসে দাঁড়াল পাহাড়ের সামনে, তখনো তারা থামল না।
আর কী আশ্চর্য!
ঠিক তখনি পাহাড়ের গায়ে খুলে গেল এক বিরাট দরজা, যেন বিশাল অতিকায় এক গুহামুখ। এখন আর পাহাড় কই? রাস্তা তো! পাহাড়ি সুড়ঙ্গের মতো সেই পথে একে একে ঢুকল তারা, সারা হামেলিন শহরের ছেলেমেয়ে ঐ মায়াবি বাঁশিওয়ালার পিছুপিছু। আর তারপর তেমনি
হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল সেই চওড়া দরজার বিরাট হাঁ। বন্ধ হয়ে গেল পাহাড়ের মুখ।
মিনিটখানেক পূর্বেও এখানে পাহাড়ের গহ্বরে বিরাট রাস্তা ছিল, হামেলিনের সব আনন্দের টুকরো নিয়ে ভেঁপুবাজিয়ে তার মধ্যে মিলিয়ে গেছে। সারা
শহরের সমস্ত লোক স্তব্ধ বিস্ময়ে চেয়ে-চেয়ে দেখল—তাদের সন্তানসন্ততি কাউকেই আর দেখা যাচ্ছে না, পাহাড় গ্রাস করে নিয়েছে সকলকে। সবাই চলে গেছে পাহাড়ের ভীষণ গহ্বরে। না, বাকি রয়ে গেল একজন, ছোট্ট একটি শিশু কেবল। সে তাল
মিলিয়ে ওদের সঙ্গে যেতে পারেনি। একপা যে খোড়া ছিল তার তাই।
যতদিন সে বেঁচে
ছিল, ঐ দিনের গল্প করেছে সে। তার মুখে কেউ কোনোদিন আর হাসি দেখেনি। সারাজীবনে সে আর
কোনোদিন কক্ষনো হাসেনি। সে বলত : “আমার খেলার সঙ্গীরা চলে গেল। হায়রে, আমারই শুধু
পোড়াকপাল, আমিই কেবল পড়ে রইলাম। আমিই কেবল রয়ে
গেলাম সবাইকে সেই কাহিনী বলবার জন্য। যা শুনেছিলাম সেদিন, যা দেখেছিলাম, তেমন আর জীবনে কখনো ঘটেনি। আর
আসবেও না,
তেমন দিন। বেজে উঠল তো ভেঁপু, সে যে কেমন তা বলে বোঝানো যাবে না। সেই আনন্দের ধ্বনি এখনো কানে লেগে আছে
আমাদের। কেবল মনে হল যে, ডাক এসেছে আমাদের। কোনো নতুন এক
দেশে,
যে-দেশে কখনো যাইনি, যে-দেশ কখনো
দেখিনি,
সেই রূপকথার রাজ্যে নিয়ে যাবে কেউ আমাদের। আর কী চমৎকার
সেই নতুন দেশ! চোখের সামনে স্পষ্ট ছবি ভেসে উঠেছিল তার। যেন কোনো উৎসবের রাজ্যে
আমরা পা বাড়িয়েছিলাম। সবই অপরূপ সেখানে। ঝরনার কলতান কানে আসছে, হাজার বর্ণের গাছে কী অপরূপ ফলফুলের মেলা। থোকায়-থোকায় ফল ঝুলছে, থোকায়-থোকায় ফুল। আর সে কী বাহার তাদের! আমাদের হামেলিনে কোথাও তেমন ফলফুল
নেই। তাছাড়া সবই কী অদ্ভুত, কেমন নতুন চড়ুই
পাখিগুলোর রং এখানকার ময়ূরের রংকেও হার মানায়। মৌমাছিরা সারাক্ষণই গুনগুন করছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে এদিক-ওদিক, ফুল থেকে ফুলে উড়ে
যাচ্ছে,
মধু খাচ্ছে; কিন্তু তারা
কামড়ায় না কখনো। আর ঘোড়াগুলো তো সবই পক্ষিরাজ, ঈগলের মতো বিশাল ডানা দুপাশে। সে এক অপূর্ব দৃশ্য, অভূতপূরী! তখন আমার মনে হল—ওখানে গেলেই আমার
খোঁড়া পা ভালো হয়ে যাবে, আমি আমার সাথীদের সাথে তাদের মতোই
ছুটোছুটি করে খেলা করব ফের। আর তখনি থেমে গেল মায়াবি ভেঁপুর অলৌকিক সুর; চমকে উঠে দেখি, আমি একলা পড়ে আছি পাহাড়ের বাইরে।
সব বন্ধুরা চলে গেছে। আমার খেলার সঙ্গীরা চলে গেল সব, শুধু ফেলে রেখে গেল আমাকে। হায়রে, কী দুর্ভাগ্য
আমার! খোঁড়া পা আর আমার ভালো হয়ে উঠল না, সেই অপরূপ দেশে
নিয়ে যাওয়ার কথাও কেউ আর বলল না আমাকে।”
সবাই ছুটে গেল
চতুর্দিকে। মেয়র, সভাসদ, সারা হামেলিনের জনতা। খোজ-খোজ রব পড়ে গেল। মায়েদের কান্নায় ডুবে গেল
হামেলিনের আকাশ-বাতাস। উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম
কিছুই বাদ গেল না, লোকলস্কর ছুটল হারানো মানিকদের
খুঁজে আনতে। অগ্নি-বায়ু, ঈশান-নৈঋতেও ঘোড়া ছুটিয়ে হেঁকে
গেল দূত। না, সবই শূন্য, শূন্য চারদিক। সারা হামেলিন কেঁদে উঠল—যা আছে। আমাদের সবই উজাড় করে দেব, হীরে-মানিক যা
আছে সব,
কেবল ফিরে আসুক, আমাদের প্রাণের
টুকরো ছেলেমেয়েরা। কিন্তু হায়, সবই বৃথা, সবই ব্যর্থ! বৃথা, বৃথা সবকিছু। যারা গেছে। তারা কেউই
আর ফিরল না। হামেলিনের আনন্দ নিয়ে আর ফিরবে না কেউ।
সেদিন ছিল ১২৮৪
খ্রিস্টাব্দের ২২ জুলাই।
- - - - - - - - - - - শেষ - - - - - - - - - - - -
"হে বিশ্বাসীগণ,
যখন একে অন্যের সাথে কোন নির্দিষ্টকালের জন্য ঋণ সংক্রান্ত আদান
প্রদান করবে তখন তা লিখে রাখ এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক যেন ন্যায়ভাবে তা লিখে
দেয়, যেহেতু আল্লাহ তাকে শিক্ষা দিয়েছেন তাই লেখক যেন
লিখতে অস্বীকার না করে। এবং ঋণ গ্রহীতা যেন লেখার বিষয় বলে দেয় এবং সে যেন স্বীয়
পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করে এবং লেখার মধ্যে বিন্দুমাত্রও কম-বেশী না করে। আর
ঋণগ্রহীতা যদি নির্বোধ কিংবা দুর্বল হয় অথবা নিজে লেখার বিষয়বস্তু বলে দিতে অক্ষম
হয়, তবে তার অভিভাবক ন্যায়সঙ্গতভাবে লিখাবে। দুজন পুরুষকে
সাক্ষী করবে, যদি দুজন পুরুষ না হয়, তবে নিজেদের পছন্দ মত একজন পুরুষ ও দুজন মহিলাকে (সাক্ষী করে নেবে)। ঐ
সাক্ষীদের মধ্য থেকে একজন যদি ভুলে যায়, তবে অপর জন তা
স্মরণ করিয়ে দিবে। যখন সাক্ষীদেরকে ডাকা হয়, তখন যেন তারা
অস্বীকার না করে। দেনা কম হোক আর বেশি হোক মেয়াদ পর্যন্ত তা লিখতে অলসতা কর না,
এ লিপিবদ্ধ করণ আল্লাহর কাছে সুবিচারকে অধিক কায়েম রাখে, সাক্ষ্যকে অধিক সুসংহত রাখে এবং তোমাদের সন্দেহে পতিত না হওয়ার পক্ষে
অধিক উপযুক্ত। কিন্তু যদি কারবার নগদ হয়, পরস্পর হাতে
হাতে আদান-প্রদান কর, তবে তা না লিখলে তোমাদের প্রতি
কোন পাপ নেই। তোমরা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সাক্ষী রাখ। কোন লেখক ও সাক্ষীকে (চাপ
প্রয়োগ) ক্ষতিগ্রস্ত করো না। যদি তোমরা এ ধরনের কিছু কর, তবে তা তোমাদের পক্ষে পাপের বিষয়। আল্লাহকে ভয় কর তিনি তোমাদেরকে
শিক্ষা দেন। আল্লাহ সব কিছু জানেন।" (সুরা আল বাক্বারাহ - ২৮২)
No comments:
Post a Comment