![]() |
আবু বকর রাঃ ও চিনির গল্প - Abu Bakr and the sugar |
ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রা)। তিনি ছিলেন অতি সাধারণ মানুষ।
খলিফা হলে কী হবে? খুবই সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন এই মহান
খলিফা। তাঁর পরিবারের অবস্থাও ছিল অতি সাধারণ। তিনি প্রয়োজনের বাইরে কোনো কিছুই
গ্রহণ করতেন না। (একদিন খলিফা আবু বকর (রা)-এর স্ত্রী হালুয়া তৈরি করবেন বলে
ইচ্ছা পোষণ করলেন। তাই তিনি খলিফাকে বললেন, হালুয়া বানাবো
কিছুটা চিনি আনলে ভালো হলো।
খলিফা আবু বকর (রা) বললেন, বায়তুলমাল হতে নিয়মিত
যে পরিমাণ চিনি পাওয়া যায় তার বাইরে তো আর চিনি দেয়া সম্ভব হবে না। খলিফার কথা
শুনে স্ত্রী হতাশ হলেন। তবে তিনি হাল ছাড়লেন না। প্রতিদিনের বরাদ্দ থেকে অল্প
অল্প করে চিনি জমাতে লাগলেন। এভাবে করে বেশ কয়েকদিনের মধ্যে কিছুটা চিনি জমা হয়ে
গেল। এবার তিনি খলিফার কাছে সামান্য ময়দা চাইলেন। ময়দা কেন? জানতে চাইলেন খলিফা।
খলিফার স্ত্রী বললেন, হালুয়া বানাব বলে অনেক কষ্ট করে
কিছুটা চিনি জমিয়েছি। এবার সামান্য ময়দা হলেই হালুয়া তৈরি করতে পারি।
স্ত্রীর কথা শুনে খলিফা কী একটা যেন ভাবলেন। এরি মধ্যে চিন্তা-ভাবনা করে
নিলেন। খানিকক্ষণ পর তিনি স্ত্রীকে বললেন, আচ্ছা, তোমার জমানো চিনিটা নিয়ে এসো তো দেখি।
স্বামীর আদেশ। স্ত্রী সেই আদেশ পালন করলেন। খলিফার সামনে এনে জমানো চিনির পাত্রটা রাখা হলো। হযরত আবু বকর (রা) চিনির পাত্রটা দেখলেন এবং তা হাতে তুলে
নিলেন। তারপর তিনি স্ত্রীকে উদ্দেশ করে বললেন, আমার মনে হয় আমরা বায়তুলমাল
থেকে প্রয়োজনের বেশি চিনি গ্রহণ করে থাকি। তা না হলে এত চিনি জমবে কেন? এটা হওয়া মোটেও
উচিত নয়। তাই এই অতিরিক্ত চিনি আমি বায়তুলমালে জমা দিতে চললাম।
যেই কথা সেই কাজ। চিনি নিয়ে খলিফা বায়তুলমালে জমা করে দিলেন। শুধু তাই
নয়। তারপর থেকে আনুপাতিক হারে বায়তুলমাল থেকে চিনির বরাদ্দও কমিয়ে দিলেন।
ন্যায় ও ইনসাফের অনুভূতি কতটা গভীর হলে আবু বকর (রা) প্রয়োজনের জিনিসও কুরবানি
করতে পারেন! আমাদের শাসকরা কি কেউ আজ এমন আছেন? আমরা খলিফা আবু বকর
(রা)-এর নীতি ও দর্শন অনুসরণ করবো। অর্থাৎ
ইসলামী জীবনবিধানের আলোকে আমরা জীবনযাপন করতে সচেষ্ট হবো।
No comments:
Post a Comment