![]() |
দ্যা গোল্ড বাগ - এডগার অ্যালান পো - বাংলা অনুবাদ - The Gold bug - edgar Allan Poe - Bengali Translation |
দ্যা গোল্ড বাগ - এডগার অ্যালান পো - বাংলা অনুবাদ - The Gold-bug - Edgar Allan Poe - Bengali Translation - Part 2 of 4
জুপিটারের
দিকে
ফিরে
হঠাৎ
হাঁক
ছাড়ল
লেগ্রাণ্ড,
কই
হে
জুপ,
সোনামণিটাকে
আনো
দেখি।
-কাকে
আনব,
স্যার
ওই
পোকাটাকে?
আঁৎকে
উঠল
জুপিটার।
মরে
গেলেও
ওটাকে
আর
ধরছি
না
আমি।
-মরগে
ব্যাটা
গাধা
কোথাকার,
রাগে
গজুগজ
করতে
করতে
লেগ্রাণ্ড
নিজেই
গিয়ে
একটা
কাঁচের
জারের
মধ্যে
থেকে
পোকাটাকে
বের
করে
আমল।
অপূর্ব
সুন্দর
দেখতে
পোকাটা।
মুগ্ধ
হয়ে
গেলাম।
অজান্তেই
মুখ
দিয়ে
বেরিয়ে
এল,
বাহ্!
-কীহে,
এখন
কেন
বাহ্
বলছ?
খোচা
দেবার
এই
সুযোগটা
ছাড়ল
না
লেগ্রাণ্ড।
আগের
কথাগুলো
মনে
করে
একটু
লজ্জা
পেলাম।
সত্যি,
যেমন
বলেছিল
লেগ্রাণ্ড
ঠিক
তেমনি
পোকাটা।
পিঠের
একপাশে
দুটো
কালো
ফুটকি,
অন্যপাশে
কালো
লম্বা
দাগ।
শক্ত
কিন্তু
তেলতেলা
আঁশ
সারা
গায়ে।
কাঁচা
সোনার
মত
উজ্জ্বল
রং।
এবং
অস্বাভাবিক
রকমের
ভারি।
মনে
হলো
জুপিটারের
কথাই
সত্যি।
কিন্তু
তাই
বলে
লেগ্রাণ্ডের
জন্যে
সোনার
খবর
এনেছে
পোকাটা,
এটাকে
পাগলামি
ছাড়া
কিছুই
ভাবতে
পারলাম
না।
পোকাটা
ফিরিয়ে
দিলাম
ওর
হাতে।
উচ্ছ্বসিত
হয়ে
লেগ্রাণ্ড
বলল,
এবার
শোনো,
কেন
তোমাকে
তাড়াতাড়ি
আসতে
বলেছি।
পোকাটাই
আমার
সৌভাগ্য
বয়ে
আনতে
যাচ্ছে।
তবে
একটা
ব্যাপারে
তোমার
পরামর্শ
চাইছি,
ব্যাপারটা
হলো...।
বাধা
দিয়ে
বললাম,
একটা
ব্যাপারেই
তোমাকে
পরামর্শ
দিচ্ছি,
তা
হলো,
তোমার
শরীর
খারাপ,
সম্ভবত
জ্বর
এসেছে,
সুতরাং
ক’টা
দিন
চুপচাপ
বিশ্রাম
নাও।
তারপর
যা
করার
কোরো।
-কে
বলেছে
আমার
জ্বর,
শরীর
অসুস্থ?
লাফ
দিয়ে
উঠে
দাঁড়াল
লেগ্রাণ্ড,
হাত
বাড়িয়ে
দিয়ে
বলল,
দেখো,
পালস্
দেখো,
জ্বর
পাও
কিনা।
হাত
না
ধরেই
বললাম,
জ্বর
না
হয়
নাই
হলো,
কিন্তু
তোমার
শরীর
অসুস্থ,
তোমাকে
ক’টা
দিন
বিশ্রাম
নিতেই
হবে।
উত্তেজনা
তোমার
শরীরের
জন্যে
ক্ষতিকর...
-দেখো,
আমি
খুব
ভাল
আছি।
আর
উত্তেজনার
কথা
বলছ?
তুমি
সাহায্য
করলে
উত্তেজনা
কমানো
তো
একবেলার
কাজ...
-বলো
তুমি,
কী
করতে
হবে?
-আজ
রাতে
আমি
আর
জুপ
বেরোচ্ছি।
পাহাড়ের
ওপাশে,
দ্বীপটার
বাইরের
দিকে।
যেহেতু
ব্যাপারটা
অত্যন্ত
গোপনীয়
সে
কারণেই
তোমার
আর
জুপের
মত
বিশ্বাসী
লোক
ছাড়া
হবে
না।
তোমাকে
আমার
সঙ্গে
যেতে
হবে।
আজকের
অভিযানই
আমার
উত্তেজনা
কমানোর
একমাত্র
পথ।
-আমার
কোনও
আপত্তি
নেই,
বললাম
আমি।
তবে
একটা
কথা,
এই
অভিযানের
সঙ্গে
পোকাটার
কোনও
সম্পর্ক
আছে?
-হ্যা।
-তা
হলে
মাফ
করো
ভাই,
এর
মধ্যে
আমি
নেই।
-কী
আর
করা,
তা
হলে
তো
জুপকেই
নিতে
হয়
শুধু।
একটু
ক্ষুন্ন
মনেই
বলল
লেগ্রাণ্ড।
বলে
পা
বাড়াল
বাইরের
দিকে।
হাত
ধরে
থামালাম
আমি
ওকে,
বললাম,
সত্যিই
যাবে?
-আজকে
আমাকে
যেতেই
হবে।
-ঠিক
আছে,
বললাম
আমি।
মোঘলের
হাতে
যখন
পড়েছি,
খানা
তো
খেতেই
হবে
একসাথে।
যাব
আমি,
তবে
এক
শর্তে।
শর্তটা
হলো
আর
কোনওদিন
এভাবে
বেরোতে
পারবে
না। রাজি?
-জো
হুকুম,
হুজুর,
ভেবো
না,
কালকে
ভোরের
মধ্যেই
ফিরে
আসব।
মাথাটা
একটু
ঝুঁকিয়ে
বলল
লেগ্রাণ্ড।
রওনা
হয়ে
গেলাম
আমরা।
তিনটের
মত
বাজে।
শীতের
দিন
আর
চারপাশে
ঝোপঝাড়ের
জন্যে
সন্ধ্যা
হয়ে
গেছে
মনে
হচ্ছে।
জুপিটারের
হাতে
কাস্তে
আর
কোদাল
দুটো।
সারা
রাস্তা
গজগজ
করতে
করতে
চলল
ও।
মাঝে
মাঝে
পাগল,
সোনা
আর
পোকা
শব্দ
ছাড়া
আর
কিছুই
বোঝা
গেল
না।
আমার
হাতে
মুখ
খোলা
দুটো
লণ্ঠন।
লেগ্রাণ্ডের
হাতে
শুধু
একটা
শক্ত
সুতোয়
বাঁধা
সেই
পোকাটা।
এক
প্রান্ত
আঙুলে
জড়িয়ে
পোকাটাকে
ঘোরাতে
ঘোরাতে,
গুন
গুন
করে
গান
গাইতে
গাইতে
চলেছে
ও।
আমার
সোনার
ময়না...
গানের
এ
কথাটুকু
বুঝলাম
শুধু।
তারপর
পোকা
বলল
না
পাখি
বলল
ঠিক
ধরতে
পারলাম
না।
বাকিটুকু
লা
লা
লা
লা
লা
দিয়ে
চলল।
মনে
হলো
ঠিক
একটা
পাগল
চলেছে।
মনটা
কেমন
যেন
করে
উঠল।
ওকি
সত্যিই
পাগল
হয়ে
গেল?
বার
কয়েক
জিজ্ঞেস
করলাম,
কোথায়
যাচ্ছি।
কোনও
উত্তরই
দিল
না
ও।
লা
লা
লা
শব্দটা
একটু
জোরালো
হয়ে
উঠল
শুধু।
হাঁটতে
হাঁটতে
দ্বীপের
উত্তর
মাথায়
পৌছালাম
আমরা।
নৌকায়
করে
একটা
খাঁড়ি
পার
হলাম।
অমন
নির্জন
জায়গায়
নৌকা
এল
কী
করে
জানতে
চাইতেই
একটু
মুচকি
হাসল
লেগ্রাণ্ড।
বুঝলাম
ওরই
কীর্তি।
মূল
ভূমির
একটা
টিলার
কাছে
নৌকা
ভেড়াল
জুপ।
টালমাটাল
হয়ে
নৌকা
থেকে
নামলাম
সবাই।
রওনা
দিলাম
সোজা
উত্তর-পশ্চিম
দিকে।
অত্যন্ত
অনুর্বর
অঞ্চল
ওটা,
আর
সে
কারণেই
বোধহয়
খুব
নির্জন।
এবারে
লেগ্রাও
সবার
মাগে।
এমন
ভাবে
ডাইনে
বাঁয়ে
না
তাকিয়ে
হেঁটে
যাচ্ছে
যেন
বাড়ির
পথ
ধরেছে।
ঘণ্টাখানেক
এভাবে
চলার
পর
ঠিক
সূর্যাস্তের
সময়
যেখানে
পৌছালাম
তেমন
নির্জন
আর
ভয়ঙ্কর
জায়গা
কল্পনাও
করিনি
কোনওদিন।
একটা
চড়াই
ভেঙে
ওপরে
উঠতেই
পায়ে
খিল
ধরে
গেল
আমার।
-তোমরা
গেলে
যাও,
আমি
বিশ্রাম
যা
নিয়ে
নড়ছি
না,
হাঁপাতে
হাঁপাতে
বললাম
আমি।
-পাঁচ
মিনিটের
বেশি
নয়,
রওনা
দেবার
পর
এই
প্রথম
কারও
সাথে
কথা
বলল
লেগ্রাণ্ড।
ধপ
করে
একটা
পাথরের
ওপর
বসে
পড়লাম।
একটু
ধাতস্থ
হয়ে
নজর
ফেরালাম
চারপাশে।
একটা
মালভূমি
এটা।
একটু
দূরেই
শুরু
হয়েছে
বিশাল
পাহাড়ের
সারি।
গায়ে
লম্বা
লম্বা
গাছ
আর
ঝোপঝাড়।
আর
গাছের
গুড়িগুলোকে
ঘিরে
রেখেছে
অসংখ্য
নুড়ি
আর
ছোট
বড়
পাথর।
এখানে
সেখানে
হাড়ের
ফাঁকে
গভীর
খাদ।
সব
মিলিয়ে
একজন
লোকের
পক্ষে
আতঙ্কিত
হয়ে
ওঠার
জন্যে
যথেষ্ট।
-পাঁচ
মিনিট
হয়ে
গেছে,
ওঠো
এবার,
বলল
লেগ্রাণ্ড।
ওই
যে
লম্বা
একটা
টিউলিপ
গাছ
দেখতে
পাচ্ছ,
ওটার
কাছেই
যাব
আমরা।
বলল
তো
যাব
কিন্তু
কীভাবে,
ভেবে
পেলাম
না।
রাস্তা
বলতে
কিছু
নেই।
সমস্তটাই
কাঁটা
আর
ঝোপঝাড়ে
ভর্তি।
-জুপ,
কাস্তে
লাগাও,
রাস্তা
বানাও।
হুকুম
দিল
লেগ্রাণ্ড।
জুপিটার
কোদাল
দুটো
নামিয়ে
রেখে
ঝোপঝাড়
পরিষ্কার
করে
একজন
যেতে
পারে
এমন
চওড়া
একটা
রাস্তা
বের
করতে
লাগল
তার
পিছনে
আমি
দু’হাতে
লণ্ঠন
দুটো
বাড়িয়ে
ধরে
এগোতে
লাগলাম।
আমার
পিছনে
লেগ্রাণ্ড,
হাতে
কোদাল
দুটো
আর
পকেটে
সোনাপোকা।
প্রায়
ঘণ্টাখানেক
পর
এসে
পৌছালা
টিউলিপ
গাছটার
গোড়ায়।
এই
শীতের
দিনেও
জুপিটারের
সার
গা
দিয়ে
দরদর
করে
ঘাম
ঝরছে।
আমাদের
কপালেও
বিন্দু
বিন্দু
ঘাম
জমেছে।
ধপ
করে
বসে
পড়লাম
গাছটার
গোড়ায়।
এখানে
পৌছে
লেগ্রাণ্ড
যেন
আরও
উত্তেজিত
হয়ে
উঠল,
কথা
বলছে
সাধারণ
অবস্থার
চেয়ে
অনেক
জোরে।
তাকিয়ে
দেখি
চারপাশে
লম্বা
লম্বা
ওক
গাছের
মিছিল,
কিন্তু
টিউলিপ
গাছটার
কাছে
ওগুলো
শিশু
মাত্র।
রাজার
মত
গাম্ভীর্য
নিয়ে
বিশাল
ডালপালা
মেনে
আকাশ
ছুঁয়ে
দাঁড়িয়ে
আছে
গাছটা।
-গাছে
চড়তে
পারিস?
জুপিটারের
দিকে
ফিরে
বলল
লেগ্রাণ্ড।
-আমি
চড়তে
পারি
না
এমন
গাছ
এখনও
জন্মায়নি,
স্যার।
মিনমিনে
গলায়
বলল
জুপিটার।।
-নে,
আর
বাহাদুরি
ফলাতে
হবে
না।
উঠে
পড়
তাড়াতাড়ি।
-কত
দূর
উঠতে
হবে?
-উঠতে
থাক
তো,
তারপর
বলছি।
দাঁড়া,
তার
আগে
এই
সোনাপোকাটা
নে।
আঁৎকে
উঠল
জুপিটার,
হাউমাউ
করে
বলল,
ওরে
বাবা
আমি
পারব
না।
ওই
শয়তানটাকে
নিয়ে
গাছে
উঠলেই
ও
আমা
ঘাড়
মটকাবে।
আমি
পারব
না,
স্যার।
-তুই
যে
একটা
ভীতুর
ডিম
তা
তো
জানতাম
না।
আরে
উজবুক,
ছোট্ট
একটা
পোকাই
তো।
আর
তোকে
তো
হাত
দিয়ে
ধরতে
হচ্ছে
না।
সুতো
ধরে
তুলে
নিবি।
নে
ওঠ
হতভাগা,
নইলে
তোর
মাথা
ফাটাচ্ছি,
বলে
হাত
ধরে
টেনে
মাটি
থেকে
জুপিটারকে
উঠিয়ে
দিল
লেগ্রাণ্ড।
নেহায়েৎ
যেতে
হবেই,
এমন
ভঙ্গিতে
উঠে
দাঁড়াল
জুপিটার। যেন
বাচ্চার
ভেজানো
কাঁথা
নিয়ে
যাচ্ছে
এমনি
ভঙ্গিতে
সুতোটার
একেবারে
শেষ
মাথাটা
অত্যন্ত
সাবধানে
ধরল
ও।
পোকাটা
থেকে
যতটা
সম্ভব
দূরে
থেকে
টিউলিপ
গাছটাতে
উঠতে
শুরু
করল।
টিউলিপ
গাছ
তরুণ
অবস্থায়
খুব
মসৃণ
থাকে,
তারপর
ধীরে
ধীরে
ডালপালা
ছড়ায়।
যখন
বুড়ো
হয়
তখন
গাছের
ডাল
ফেটে
খসখসে
হয়ে
যায়,
নতুন
ডালপালা
গজায়
কাণ্ডের
চারপাশে।
এইসব
ডালপালা
ধরে
আর
ফাটা
ছালে
পা
রেখে
উঠতে
লাগল
জুপিটার।
মাটি
থেকে
প্রায়
ষাট
সত্তর
ফুট
ওঠার
পরে
পৌছোল
গাছের
প্রথম
বড়
ডালটাতে।
-পৌছে
গেছি,
স্যার,
চিৎকার
ভেসে
এল
জুপিটারের।
এবার
কোনদিকে?
ডানে
না
বায়ে?
-ওপর
দিকে,
হতভাগা!
লেগ্রাণ্ডের
বাজখাই
আওয়াজ
শুনে
জুপিটার
উঠে
দাঁড়াল
আবার।
এরপর
থেকে
ডালপালা
বেশি
থাকায়
তরতরিয়ে
উঠতে
লাগল
ও।
-ওই
যে
সবচেয়ে
বড়
ডালটা
দেখছিস,
ওটা
পর্যন্ত
যা
আগে।
গুনতে
গুনতে
যা,
কটা
বড়
ডাল
পেরোলি।
ডাল-পালার
আড়ালে
জুপিটারকে
আর
দেখা
যাচ্ছে
না।
পাতার
আড়াল
থেকে
কিছুক্ষণ
পর
চিৎকার
শোনা
গেল
জুপিটারের,
আর
কতদূর?
-কটা
ডাল
পেরোলি?
-পাঁচটা।
-আর
একটা
বাদ
দিয়ে
পরেরটায়
যা।
সাত
নম্বর
ডালে,
বুঝেছিস?
কিছুক্ষণ
পর
চিৎকার
শোনা
গেল
জুপিটারের,
এসে
গেছি,
স্যার,
এবার
নামি?
-তোর
মুণ্ডু
ছিড়ে
ফেলব,
বদমায়েশ
কোথাকার।
যেভাবে
দাঁত
মুখ
খিচিয়ে
গাল
দিয়ে
উঠল
লেগ্রাণ্ড
তাতে
ও
যে
এখন
বদ্ধ
উন্মাদ
সে
ব্যাপারে
কোনও
সন্দেহ
রইল
না
আমার।
-এবারে
এই
ডালটা
বেয়ে
সোজা
এগো,
কিছু
চোখে
পড়লে
সাথে
সাথে
জানাবি,
চিৎকার
করে
জানাল
লেগ্রাণ্ড।
কিছুক্ষণ
পর
শোনা
গেল
জুপিটারের
চিৎকার,
আর
এগোতে
সাহস
পাচ্ছি
না,
স্যার।
ডালটা
মরা,
একেবারে
শুকনো
মনে
হচ্ছে।
-কি
বললি,
শুকনো
ডাল?
-জী,
স্যার,
একেবারে
শুঙ্কং
কাষ্ঠং।
-চুপ,
ধমকে
উঠল
লেগ্রাণ্ড।
একটুক্ষণ
চিন্তা
করল,
কী
যেন।
আমি
বলতে
গেলাম,
অনেক
হয়েছে,
চলো
এবার
ফেরা
যাক,
এমন
ভাবে
তাকাল
আমার
দিকে
যে
একটু
ভয়ই
পেলাম।
ওপর
দিকে
তাকিয়ে
চিৎকার
করল,
-জুপ।।
-বলেন,
স্যার।
ছুরি
আছে
তোর
সাথে?
-আছে,
স্যার।
-তা
হলে
ডালটার
গায়ে
ছুরি
বসিয়ে
দেখ
তো
ওটা
খুব
পচা
কিনা।
খানিকক্ষণ
পরে
উত্তর
এল
জুপের,
খুব
পচা,
স্যার,
তবে
একেবারে
ঝাঝরা
নয়।
আমি
একা
হলে
এগোতে
পারতাম
আরও।
-একা
হলে
মানে?
তোর
সাথে
আবার
কে
জুটল
ওখানে?
অবাক
হয়ে
চিক্কার
করল
লেগ্রাণ্ড।
-পোকাটা,
স্যার।
যা
ভারি
ব্যাটা।
নীচে
ফেলে
দিই,
স্যার?
তা
হলে
একা
একা
ভালমত
যাওয়া
যাবে।
-খবরদার,
পাজী,
ছুঁচো,
পোকাটাকে
ফেললে
তোর
মুণ্ডু
ছিড়ে
ফেলব।
এগোতে
থাক,
বকশিশ
পাবি
আস্ত
একটা
রুপোর
ডলার।
নিশ্চিন্ত
গলায়
বলল
লেগ্রাণ্ড।
সাথে
সাথে
উচ্ছ্বসিত
গলায়
উত্তর
এল,
একেবারে
শেষ
মাথা
ছুঁয়ে
ফেলব,
স্যার।
কিছুক্ষণ
পরপরই
লেগ্রাণ্ড
চিৎকার
করতে
লাগল,
কীরে,
কতদূর?
আর
প্রত্যেকবারই
উত্তর
এল,
এই
তো,
স্যার,
প্রায়
শেষ
মাথায়
পৌছে
গেছি।
বিরক্ত
হয়ে
চিৎকার
বন্ধ
করল
লেগ্রাণ্ড।
কিছুক্ষণ
পর
ওপর
থেকে
হঠাৎ
আতঙ্কিত
গলা
ভেসে
এল,
জুপিটারের,
ওরে
বাবারে!
স্যার,
মারা
গেছি
স্যার।
একেবারে
মারা
গেছি।
লেগ্রাণ্ড
উত্তেজিত
গলায়
জিজ্ঞেস
করল,
কী
হলো?
-মড়ার
মাথা,
স্যার,
মস্ত
বড়,
ডালে
আটকে
আছে।
-দেখতে
পেয়েছিস
তা
হলে?
কিন্তু
কীভাবে
ডালে
আটকে
আছে
দেখ
তো।
-আজব
ব্যাপার,
স্যার,
কে
বা
কাহারা
যেন
পেরেক
দিয়ে
খুলিটা
ডালের
সাথে
আটকে
দিয়েছে।
-তোর
সাধু
ভাষা
থামা,
ধমকে
উঠল
লেগ্রাণ্ড।
এবার
মন
দিয়ে
আমার
কথা
শোন।
দেখ
তো
ওটার
বা
চোখ
কোন্
দিকে।
-চোখ
কোথায়
পাব,
স্যার।
চোখ-টোখ
কিছু
নেই,
একেবারে
ফক্কা।
-প্যাচাল
থামা,
তোর
ডান
হাত
কোনটা,
বাঁ
হাত
কো্নটা-চিনিস?
-কী
যে
বলেন,
স্যার,
এ-তো
সোজা।
যে
হাতে
কাঠ
কাটি
সেটাই
তো
বাঁ
হাত।
-ব্যাটা
বাঁইয়া,
হেসে
উঠল
লেগ্রাণ্ড।
শোন
এবার,
তোর
বা
হাতটা
যেদিকে
সেদিকেই
তো
বা
চোখ,
তাই
না?
এবার
দেখ
খুলিটার
বাঁ
চোখের
ফোকরটা
খুঁজে
পাস্
কিনা।
বুঝেছিস
তো?
-জ্বী,
স্যার,
পানির
মত।
ওর
বাঁ
হাতের
দিকেই
ওর
বা
চোখ,
তাইতো?
এত
সোজা।
ওহহ,
শুধু
মুণ্ডুর
আবার
হাত
পাই
কই।
মুশকিলে
ফেললেন,
স্যার।
লেগ্রাণ্ড
রাগের
চোটে
কী
বলবে,
ভেবে
না
পেয়ে
কষে
লাথি
কসাল
একটা
মড়া
ডালে।
রকেটের
মত
ছিটকে
চলে
গেল
ওটা।
তারপর
কিছু
বলতে
ওপরে
তাকাতেই
ভেসে
এল
জুপিটারের
গলা,
পেয়েছি
স্যার,
বা
চোখ,
এবার
কী
করতে
হবে?
নেমে
আসব?
-চুপ
শয়তান,
গালি
দিয়ে
উঠল
লেগ্রাণ্ড।
এবার
ওই
বা
চোখের
গর্তে
পোকাটাকে
নামিয়ে
দে।
-ছেড়ে
দেব,
স্যার?
উড়তে
উড়তে
নামুক?
-খবরদার,
চেঁচিয়ে
উঠল
লেগ্রাণ্ড।
সুতো
ছেড়ে
দিবি
না।
পোকাটা
নামিয়ে
দিয়ে
আস্তে
আস্তে
সুতো
ছাড়তে
থাক।
থামতে
বললে
থামবি।।
-জ্বী,
স্যার,
এ
আর
এমন
কী।
চুপচাপ
তাকিয়ে
থাকলাম
ওপরের
দিকে।
কিছুক্ষণ
পর
পাতার
ফাক
দিয়ে
দেখা
গেল
পোকাটাকে।
গাছের
ফাঁক-ফোকর
দিয়ে
গলে
আসা
চাঁদের
আলোয়
ঝিকমিক
করছে
পোকাটা।
একটু
দুলছে
আর
সেই
সাথে
ছোট
ছোট
ঝাকুনি
দিয়ে
একটু
একটু
করে
নেমে
আসছে
নীচে।
মনে
হলো
ঠিক
যেন
একটা
সোনার
তারা
আকাশ
থেকে
খসে
পড়ছে।
লেগ্রাণ্ডের
দিকে
তাকিয়ে
দেখি
সম্মোহিতের
মত
চেয়ে
আছে
ও।
পোকাটা
নামতে
নামতে
ঠিক
ঝোপঝাড়ের
মাথার
ওপর
আসতেই
চেঁচিয়ে
উঠল
লেগ্রাণ্ড,
থাম।
থেমে
গেল
নামা।
লেগ্রাণ্ড
পোকাটার
ঠিক
নীচে
খানিকটা
জায়গায়
উল্টো
সোজা
কাস্তেচালিয়ে
পরিষ্কার
করে
ফেলল।
ওপর
দিকে
তাকিয়ে
হাঁক
ছাড়ল,
নামা।
নামতে
লাগল
পোকাটা।
নামতে
নামতে
এক
সময়
মাটি
ছুঁলো।
লেগ্রাণ্ড
পড়ে
থাকা
একটা
লম্বা
ডাল
কুড়িয়ে
নিয়ে
ওটাকে
কেটে
তিনটে
চোখা
খুঁটি
বানাল।
একটি
খুঁটি
পোকাটা
যেখানে
পড়েছে
ঠিক
সেখানে
পুঁতল।
-সুতো
ছেড়ে
দিয়ে
নেমে
আয়
এবার,
বলল
লেগ্রাণ্ড।
উঠে
দাঁড়ালাম
আমি। এগিয়ে
গেলাম
ওর
কাছে।
ও
ততক্ষণে
গভীর
মনোযোগ
দিয়ে
গাছের
গুড়িটা
পরীক্ষা
করছে।
বেশ
ভাল
ভাবে
কিছুক্ষণ
দেখে
আরেকটা
খুঁটি
বের
করে
গাছের
গুড়ির
যে
অংশটা
প্রথম
খুঁটিটার
সবচেয়ে
কাছে
সেখানে
পুঁতে
দিল
শক্ত
করে।
এবারে
পকেট
থেকে
বের
করল
একটা
মাপার
ফিতে।
প্রথম
খুঁটিটার
গোড়ায়
একটা
মাথা
রেখে
বলল,
শক্ত
করে
ধরে
থাক।
জুপ
একটা
লণ্ঠন
আর
কাস্তে
নিয়ে
আমার
সাথে
আয়।
এরপর
ফিতে
ছাড়তে
ছাড়তে
এমনভাবে
এগোতে
লাগল
যেন
প্রথম
ও
দ্বিতীয়
খুঁটির
সাথে
একই
সরলরেখায়
থাকে
সে।
ওর
সামনে
চলল
জুপিটার,
ঝোপঝাড়গুলো
পরিষ্কার
করতে
করতে।
-দশ,
বিশ...
গুনতে
শুনতে
চলল
ও,
জুপিটারের
দিকে
পিছন
ফিরে।
পঞ্চাশ।
থাম।
একটা
ঝাকুনি
দিয়ে
ফিতেটাকে
টানটান
আর
সোজা
করে
নিল
ও।
দেখো
তো,
ফিতেটা
খুঁটি
দুটোর
ওপর
দিয়ে
এল
কিনা?
-একটু
ডাইনে
সরাও,
বললাম
আমি।
আরেকটু,
আরেকটু...,
ব্যস,
থাম।
লেগ্রাণ্ড
এবার
গুড়ি
থেকে
ঠিক
পঞ্চাশ
ফুটের
মাথায়
তৃতীয়
খুঁটিটা
পুঁতল।
-পরিষ্কার
কর
এখানে,
গোল
করে,
জুপিটারকে
হুকুম
দিল
ও।
সারারাত
কি
খালি
ঝোপঝাড়ই
কাটব
নাকি,
স্যার?
জুপিটারের
সরল
প্রশ্ন।
এক
ধমকে
থামিয়ে
দিল
লেগ্রাণ্ড,
যা
বলছি,
তাই
কর।
একদম
ফালতু
কথা
বলবি
না।
ধমক
খেয়ে
হাসি
চাপতে
চাপতে
ঝোপঝাড়
পরিষ্কারের
কাজে
হাত
লাগাল
জুপিটার।
মোটামটি
বেশ
খানিকটা
জায়গা
পরিষ্কার
করার
পর
ওকে
থামতে
বলল
লেগ্রাণ্ড।
তারপর
মাপার
ফিতের
এক
মাথা
আমার
হাতে
ধরিয়ে
দিল।
আগের
মতই
খুঁটিটার
গোড়ায়
শক্ত
করে
ধরে
থাকো।
মাটি
থেকে
ছোট
মতন
শক্ত
একটা
গাছের
ডাল
নিয়ে
ফিতেটার
দু'ফুট
লেখা
যেখানে
সেখানে
শক্ত
করে
ধরল
ও।
ফিতেটা
টানটান
করে
ডালটা
মাটিতে
শক্ত
করে
চেপে
ধরে
ঘুরতে
শুরু
করল।
বৃত্তটা
সম্পূর্ণ
হতেই
কোদাল
দিয়ে
দাগটা
আরও
স্পষ্ট
করে
তুলল।
কোদালটা
দিয়ে
এবারে
বৃত্তটার
মধ্যে
খুঁড়তে
শুরু
করল।
মিনিট
দশেক
একটানা
পরিশ্রম
করার
পর
কোদালটা
ছুঁড়ে
ফেলে
দিল।
-এবারে
তুমি
শুরু
কর,
হাঁপাতে
হাঁপাতে
বলল
ও।
এ
ধরনের
পরিশ্রম,
বিশেষ
করে
এরকম
অর্থহীন
পরিশ্রম
আমার
একদম
পছন্দ
নয়।
প্রতিবাদ
করব
কিনা,
ভাবলাম
একবার
কিন্তু
ও
যেমন
ক্ষেপে
আছে
তাতে
আমার
মাথায়
কোদাল
দিয়ে
ঘা
মেরে
দেয়
কিনা,
সন্দেহ
হলো।
ঝামেলা
করে
লাভ
নেই,
ভাবলাম
আমি।
নিঃশব্দে
কোদালটা
তুলে
নিলাম
হাতে।
মিনিট
দশেক
পরেই
জান
বেরিয়ে
যাবার
দশা
হলো
আমার।
শীতকাল
বলে
লোহার
মত
শক্ত
মাটি।
জুপিটারের
হাতে
কোদাল
ছেড়ে
দিয়ে
আধ
হাতখানেক
জিভ
বের
করে
হাঁপাতে
লাগলাম।
এদিকে
আরেক
ঝামেলা।
জার্ডিনকেও
বোধহয়
সোনাপোকাটা
কামড়েছে।
গর্ত
খোঁড়ার
শুরু
থেকে
সেই
যে
প্রাণপণে
ঘেউ
ঘেউ
শুরু
করেছে,
আর
থামাথামি
নেই।
আর
রাগ-রাগিণীর
সে-কী
বাহার।
অসহ্য
হয়ে
উঠল
চিৎকার।
No comments:
Post a Comment