মজার গল্প, উপন্যাস, গোয়েন্দা কাহিনী, ছোট গল্প, শিক্ষামূলক ঘটনা, মজার মজার কৌতুক, অনুবাদ গল্প, বই রিভিউ, বই ডাউনলোড, দুঃসাহসিক অভিযান, অতিপ্রাকৃত ঘটনা, রুপকথা, মিনি গল্প, রহস্য গল্প, লোমহর্ষক গল্প, লোককাহিনী, উপকথা, স্মৃতিকথা, রম্য গল্প, জীবনের গল্প, শিকারের গল্প, ঐতিহাসিক গল্প, অনুপ্রেরণামূলক গল্প, কাহিনী সংক্ষেপ।

Total Pageviews

Sunday, January 19, 2025

হাসির গল্প - রেমিট্যান্স যোদ্ধা - Remittance Warriors

রেমিট্যান্স যোদ্ধা
সদ্যই আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সপরিবারে হোয়াইট হাউসে উঠেছেন। নির্বাচনে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদেরসহ অন্যান্য সবাইকে এক প্রীতিভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। নিরাপত্তা রক্ষীরা যাচাই-বাছাই করে সেসব অতিথিদের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছেন। প্রীতিভোজের শুরুতেই ডোনাল্ড ট্রাম্প সবার উদ্দেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, 'আমার প্রিয় সমর্থক এবং সহযোগী বন্ধুরা। আপনাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এবারের এই নির্বাচন। আপনারা ছিলেন বলেই আমি আবার গ্রেট আমেরিকার সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। আমাদের এই মহান দেশ গড়ার পেছনে যাদেরই অবদান আছে সবাইকে আমি স্বীকৃতি দেব।' উপস্থিত অতিথিবৃন্দের মধ্যে তুমুল করতালি উঠে। সবাই উচ্ছ্বসিত। এই সময় একজন বেয়াড়া সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, 'কিন্তু মি. প্রেসিডেন্ট, দেশ গড়ায় যাদের অবদান আছে তাদের তো সবসময়ই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এটা তো নতুন কিছু না।' ট্রাম্প মুখ বাঁকা করে তার বিখ্যাত হাসিটা হাসেন, তারপর বলেন, 'না, এমন অনেকে আছেন যাদের আমেরিকার উন্নতির পেছনে বিশাল ভূমিকা আছে কিন্তু তাদের কথা কেউ স্মরণ করেনি, স্বীকৃতিও দেয়নি। তারা রয়ে গেছে নিভৃতে। আমি এবার তাদের সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেব।' এবার উপস্থিত অতিথিগণের মধ্যে তীব্র কৌতূহল দেখা যায়। সেই সাংবাদিক সাহেব কৌতূহলী গলায় জিজ্ঞেস করেন, 'মাননীয় প্রেসিডেন্ট মহোদয়, এমন কারা আছে যাদের অবদান থাকা সত্ত্বেও এখনও স্বীকৃতি জানানো হয়নি?' ট্রাম্প মুচকি হাসেন, তারপর মাথার সোনালি চুল ঠিক করে বলেন, 'তৃতীয় বিশ্বের কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের দেশের সমস্ত টাকা-পয়সার লুটে আমাদের দেশে ইনভেস্ট করেছে। আমাদের দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করার জন্য তারা তাদের সরকারি ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে এই দেশে নিয়ে এসেছে। এই দেশের আবাসন খাতে অনেক টাকা ইনভেস্ট করেছে। আমি সেই সব দেশের মানুষদের স্বীকৃতি দিতে চাই। আমেরিকার জন্য তারা রেমিট্যান্স যোদ্ধা। আর এদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ নামে একটি দেশের মানুষ। প্রথম দশ জনের মধ্যে সাতজনই বাংলাদেশের। আমার পার্শ্ববর্তী দেশ কানাডাতেও তাদের ভূমিকা অপরিসীম। সে দেশে এমনকি একটা বেগমপাড়াও আছে। আমি বিগত ট্রুডো সরকারকে তাদের স্বীকৃতির ব্যাপারে অনুরোধ করেছিলাম। উনি অনুরোধ রাখেননি। কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রীকে আমি আহ্বান জানাবো দেশের সত্যিকারের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের যেন স্বীকৃতি দেওয়া হয়।' উপস্থিত অতিথিবৃন্দের মধ্যে একটা দ্বিধা দেখা দেয়। প্রেসিডেন্টের এমন উদ্ভট কথাতে হাততালি দেবে নাকি দেবে না। সেই সাংবাদিক এবার উৎকণ্ঠা নিয়ে প্রশ্ন করেন, ' কিন্তু মিস্টার প্রেসিডেন্ট, এরা তো নিজের দেশের সর্বনাশ করে আমাদের এখানে এসেছে। এরা না আবার আমাদের ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি করে পাচার করে দেয়। এরা আমাদের দেশের জন্য তো বিপদজনক।' ট্রাম্প এবার মুচকি হেসে বলে, 'আমার কথা এখনো শেষ হয়নি। পুরোটা শুনে তারপর প্রশ্ন করবেন। আমি এই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ন্যাশনাল ল্যাবে পাঠাব। তাদের ওপর আজীবন গবেষণা চলবে। কী করে একটা দেশের মানুষ তার নিজের দেশের সব টাকা লুটপাট করে অন্য আরেকটা দেশে পাচার করে নিয়ে আসে। তাদের শরীরের কোন জিন এই বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী। বিজ্ঞানীরা সেটা খুঁজে বার করুক। যাতে করে এদেশের মানুষ কখনও তাদের মতো না হয়ে যায়। আমেরিকার স্বার্থে এই রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আমাদের গবেষণাগারে নিজেদের উৎসর্গ করবে। আমরা তাদের বীরের সম্মান দেব।' এবার পুরো হলজুড়ে করতালিতে ফেটে পড়ে। আর এদিকে গতিউর, নজির, কাইফুজ্জামান, আলম সহ অনেক রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আতংক নিয়ে ট্রাম্পের এই ভাষণ শুনছিল। লোকটা কি সত্যিই ওদের ল্যাবরেটরির গিনিপিগ বানাবে? #রেমিট্যান্স_যোদ্ধা

No comments:

Post a Comment

Popular Posts